উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: স্বজনদের কারণে ভুগতে হবে মন্ত্রী-এমপিদের

মো. সাইফুল ইসলাম :


আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির সন্তান, আত্মীয়-স্বজনদের অংশ না নিতে নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তবে, কেন্দ্রের এমন নির্দেশনা অনেকেই পাত্তা দিচ্ছেন না। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় পার হলেও হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া সাড়া দেননি অনেকে।

কেন্দ্রের কঠোর বার্তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এখনও মাঠে আছেন তারা। যারা কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করবেন তাদের বিষয়ে আগামী ৩০ এপ্রিল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দল। ওই দিন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। প্রয়োজনে এমপি কিংবা মন্ত্রীদের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিতে শোকজ করবে আওয়ামী লীগ। এছাড়া প্রথম ধাপে যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়েও দলের হাইকমান্ড থেকে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাইয়ের সময় এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এ ধাপে বৈধ প্রার্থী এক হাজার ৭৮৬ জন। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সময় ছিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ হয়েছে ২৩ এপ্রিল। ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে।

এ ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

 

  • এখন পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন যারা

গত রোববার নাটোরের সিংড়ায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। সোমবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগারের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সহিদুল ইসলাম। সরে দাঁড়ান নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদৌস।

  • এখনও ভোটের মাঠে যেসব মন্ত্রী-এমপির স্বজন

কুমিল্লার বরুড়ায় মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্যালক মো. হামিদ লতিফ ভূঁইয়া কামাল। আওয়ামী লীগে তার কোনো পদ নেই। পেশায় ব্যবসায়ী কামালের গ্রামের বাড়ি বরুড়ার আদ্রা ইউনিয়নের মনোহরপুরে। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী। ছেলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না বলে এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন এমপি একরামুল। একরামুল হকের স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলী কবিরহাট উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান। টানা তিনবারের চেয়ারম্যান শিউলী এবারও ওই উপজেলায় প্রার্থী হচ্ছেন।

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস এবং তাদের বড় ছেলে আশিক আলী। এ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন। তিনি মোহাম্মদ আলীর ছোট ভাই। ভাতিজার সমর্থনে এবার লিটন মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়ে গেলেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সুযোগ এখনও আছে। এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করাটাই উচিত। এ কাজটা এখনও কেন করা হলো না, এটা আমাদের ভাবিয়েছে। আশা করি, দলের যে লক্ষ্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন; সেটি বাস্তবায়ন হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা নির্বাচিত হোক, এটাই আমাদের চাওয়া। যাদের অবদানে, যাদের ত্যাগ-তিতিক্ষার কারণে আওয়ামী লীগ তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে; সেসব ত্যাগী নেতাই যেন বিজয়ী হন এটাই আমাদের লক্ষ্য।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মাদারীপুর-২ আসনের এমপি শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান। এমপির চাচাতো ভাই সাবেক চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খানও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান এমপির আপন ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মাহবুব-উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই ও বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন স্থানীয় এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী।

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে আশিক আবদুল্লাহ, পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এমপি মো. মকবুল হোসেনের ছেলে গোলাম হাসনায়েন রাসেল, বেড়া উপজেলায় পাবনা-১ আসনের এমপি ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর আপন ছোট ভাই আব্দুল বাতেন ও ভাতিজা আব্দুল কাদের সবুজ প্রার্থী হয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই সাইদুর রহমান স্বপন এবং তার সাবেক এপিএস বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়ছার ভূঁইয়া জীবন।

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলী পারভিন নিরী নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তির ভাগনী। এবারও একই পদে নির্বাচন করছেন নিরী। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের ভগ্নীপতি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ রায়পুর উপজেলায় আবারও প্রার্থী হয়েছেন। তার মামা হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এ উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু। তিনি এমপির ফুফাতো শ্যালক।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগরের আপন ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আলী মুনছুর বাবু, চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদুল ইসলাম ও মো. আবু তালেব মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এবারও দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন করছেন বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসরাফিল হোসেন। তিনি মানিকগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই।

কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান রেহেনা মজিদ স্থানীয় এমপি অধ্যাপক আব্দুল মজিদের স্ত্রী। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই। মুরাদনগর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান আহসানুল আলম সরকার বর্তমান এমপি জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে। লাকসাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মহব্বত আলী পুনরায় এ পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক।

সব কেন এমপি-মন্ত্রীদের ঘরে নিতে হবে? দেশে কি আর জনপ্রিয় নেতাকর্মী নেই? অবশ্যই আছে, মন্ত্রী-এমপিরা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করেন, এ কারণে ত্যাগী নেতাকর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। নেত্রী চমৎকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা বাস্তবায়ন করতে না পারলে তৃণমূলে দলের গ্রহণযোগ্যতা হারাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এ বি এম বাহার সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি মুজিবুল হকের ভাতিজা।

পিরোজপুরের নাজিরপুরে উপজেলা পারিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পিরোজপুর-১ আসনের এমপির ভাই এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী। শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপুর চাচাতো ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ভোলার লালমোহনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন রিমন ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ফুফাতো ভাই। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম লাবু এমপির চাচাতো ভাই। বোরহানউদ্দিন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম এমপি তোফায়েল আহমেদের ভগ্নীপতি। তিনি এবারও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী।

কেন্দ্রের কঠোর বার্তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এখনও মাঠে আছেন তারা। যারা কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করবেন তাদের বিষয়ে আগামী ৩০ এপ্রিল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দল। প্রয়োজনে এমপি কিংবা মন্ত্রীদের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিতে শোকজ করবে আওয়ামী লীগ। এছাড়া প্রথম ধাপে যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়েও দলের হাইকমান্ড থেকে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ভাতিজার স্ত্রী লাভলী চৌধুরী। তিনি ছাড়া আর কেউ এই পদে মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

  • যেসব উপজেলায় প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, হাকিমপুর (দিনাজপুর) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সাঘাটা (গাইবান্ধা) উপজেলার চেয়ারম্যান, বেড়া (পাবনা) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সিংড়া (নাটোর) উপজেলার চেয়ারম্যান ও কুষ্টিয়া সদরের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়া, বাগেরহাট সদরে তিনটি পদে, মুন্সীগঞ্জ সদরে তিনটি পদে এবং শিবচরে (মাদারীপুর) তিনটি পদে প্রার্থীরা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

পাশাপাশি, বড়লেখা (মৌলভীবাজার) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, পরশুরাম (ফেনী) উপজেলায় তিনটি পদে, সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান, কক্সবাজার সদরে ভাইস চেয়ারম্যান, রোয়াংছড়ি (বান্দরবান) উপজেলার চেয়ারম্যান ও কাউখালী (রাঙ্গামাটি) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

  • যা বলছেন কেন্দ্রীয় নেতারা

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়ে গেলেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সুযোগ এখনও আছে। এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করাটাই উচিত। এ কাজটা এখনও কেন করা হলো না, এটা আমাদের ভাবিয়েছে। আশা করি, দলের যে লক্ষ্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন; সেটি বাস্তবায়ন হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা নির্বাচিত হোক, এটাই আমাদের চাওয়া। যাদের অবদানে, যাদের ত্যাগ-তিতিক্ষার কারণে আওয়ামী লীগ তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে; সেসব ত্যাগী নেতাই যেন বিজয়ী হন এটাই আমাদের লক্ষ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল পরিকল্পনা (মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের নির্বাচনে অংশ নিতে না দেওয়া) কোনোভাবেই ভেস্তে যেতে দেব না। যেসব এমপি-মন্ত্রী বুঝতে পারছেন না কিংবা না বুঝার ভান করছেন, আমরা মনে করি দ্রুতই তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। এখনও সময় আছে, মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজন যারা এখনও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি তারা নির্বাচনের আগেই সরে দাঁড়াবেন। সেই সুযোগ এখনও আছে। তারা সেটি কাজে লাগাবেন বলে আমাদের আশা।’

উপজেলা নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রী ও এমপিদের স্বজনদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কড়া বার্তাও দিয়েছেন। এজন্য দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সারাদেশ থেকে তথ্য নিয়ে তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সেই প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করেছেন সাংগঠনিক সম্পাদকরা।

 

সোমবার (২২ এপ্রিল) পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এখনও যেসব মন্ত্রী ও এমপির স্বজনরা সরে দাঁড়াননি তাদের নামের তালিকা তৈরা করা হয়েছে। এ তালিকা আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা বলেন, সব কেন এমপি-মন্ত্রীদের ঘরে নিতে হবে? দেশে কি আর জনপ্রিয় নেতাকর্মী নেই? অবশ্যই আছে, মন্ত্রী-এমপিরা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করেন, এ কারণে ত্যাগী নেতাকর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। নেত্রী চমৎকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা বাস্তবায়ন করতে না পারলে তৃণমূলে দলের গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। হাইকমান্ডের নির্দেশ যারা অমান্য করবে তাদের দলে রাখার কী প্রয়োজন? এমপি হোক বা মন্ত্রী, যে এ নির্দেশনা অমান্য করবে প্রথম ধাপেই তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যাতে উপজেলা নির্বাচনের বাকি ধাপগুলো আরও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনেও অনেক উপজেলায় এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। দল তাদের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেবে? এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘তাদের ব্যাপারে ৩০ এপ্রিল সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেদিন আমাদের কার্যনির্বাহী বৈঠক রয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।’